সূরা
বাক্বারার ১৬৩-৬৪ আয়াতঃ
অর্থঃ
আর তোমাদের উপাস্য একইমাত্র উপাস্য। তিনি ছাড়া মহা করুণাময় দয়ালু কেউ নেই। নিশ্চয়ই আসমান ও যমীনের সৃষ্টিতে, রাত ও
দিনের বিবর্তনে এবং নদীতে নৌকাসমূহের চলাচলে মানুষের জন্য কল্যাণ রয়েছে। আর আল্লাহ তা’ আলা আকাশ থেকে যে পানি নাযিল করেছেন, তদ্দ্বারা
মৃত যমীনকে সজীব করে তুলেছেন এবং তাতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সবরকম জীব-জন্তু। আর আবহাওয়া পরিবর্তনে এবং মেঘমালার যা তাঁরই হুকুমের অধীনে
আসমান ও যমীনের মাঝে বিচরণ করে, নিশ্চয়ই সে সমস্ত বিষয়ের মাঝে নিদর্শন রয়েছে
বুদ্ধিমান সম্প্রদায়ের জন্যে।
মূল ভাবঃ
আমার সীমিত বুদ্ধিতে মনে হচ্ছে এই
আয়াতে আবার আল্লাহর পরিচয় দেয়া হচ্ছে। ঊনি যে আসলে সব কিছুর নিয়ন্ত্রক এটা মনে
প্রাণে বিশ্বাস ও আত্মস্থ করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। আর যখনই আমরা তা না করে
তাবিজ কবজের দ্বারস্থ হবো, আমরা শিরকে লিপ্ত হবো, তাই
শুরুতেই বলে দেয়া হচ্ছে যে আমাদের ইলাহ শুধু আল্লাহই।
সূরা
বাক্বারার ২৫৫-৫৬ আয়াতঃ
অর্থঃ
আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই, তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে
পারে না এবং
নিদ্রাও নয়। আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর। কে আছ এমন, যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির
সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোন কিছুকেই
পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর সিংহাসন
সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত
করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।দ্বীনের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি বা বাধ্য-বাধকতা নেই। নিঃসন্দেহে হেদায়াত
গোমরাহী থেকে পৃথক হয়ে গেছে। এখন যারা গোমরাহকারী ‘তাগুত’দেরকে মানবে না এবং আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন করবে, সে ধারণ করে নিয়েছে সুদৃঢ় হাতল যা ভাংবার নয়।
আর আল্লাহ সবই শুনেন এবং জানেন। (২ঃ২৫৫-৫৬)
মূল ভাবঃ
সূরা বাক্বারার ২৫৫
নং আয়াত আয়াতুল ক্বুরসী হিসেবেই সমধিক পরিচিত। আয়াতুল কুরসীর ফযীলতের কথা
মনে হয় নতুন করে বলার কিছু নাই। এটা কুরআনের শ্রেষ্ঠতম আয়াত। বিস্তারিত জানা যাবে এখানে।
আয়াতুল কুরসীতে অবশ্যই আল্লাহর পরিচয় দেয়া হয়েছে শ্রেষ্ঠতম ভাষাশৈলী
দিয়ে। এটাকে নিজে পড়ে, অনুধাবন করে তারপর আমল করলে তবেই ফল পাওয়া যাবে ইনশাল্লাহ।
আমরা অনেক সময় স্রেফ বাড়িতে ঝুলায় রাখি বা গাড়িতে। ভাবি যে এটার লেখাটা আমাদের রক্ষা করবে। আলিমরা অধিকাংশ সময়েই
এগুলোকে নিরুৎসাহিত করেন কারণ কুরআন একারণে নাযিল হয় নি।
২৫৫ আয়াতের পরই ২৫৬ আয়াতের বিষইয়বস্তুটা কিন্তু খুব interesting. আল্লাহকে ছাড়া আমরা যখনই অন্য কারো দ্বারস্থ
হব বিপদ আপদ থেকে মুক্তির
আশায়- তাবিজ কবজ, জ্বীন সাধক, পীর বাবা ইত্যাদি, তখনই
আমরা হিদায়াতের পথ থেকে
পৃথক হয়ে যাবো ও তাগুদের অনুসারী হয়ে যাবো।
আল্লাহ্ আমাদেরকে সেই সুদৃঢ় হাতল ধরে থাকার তৌফিক দিন, যেটার
কথা এখানে বলা হয়েছে, আমীন।
No comments:
Post a Comment