রিবার
নানা রূপ
আজকের পর্বে আমরা রিবার
নানা রূপের সাথে পরিচিত হব যেন দৈনন্দিন জীবনে আমরা সেগুলো থেকে বেঁচে থাকতে পারি-
টাকা ধার নেয়ার
ক্ষেত্রেঃ
- এতদিনে আমরা নিশ্চয়ই বুঝে গেছি যে কাউকে টাকা ধার দিলে কোনো যুক্তিতেই
বেশী ফেরত নেয়ার অবকাশ নেই। এটা সুদী ব্যাংকে টাকা ডিপোজিট থাকার ক্ষেত্রেও
প্রযোজ্য।
- ক্রেডিট কার্ডে যত টাকা ধার নেয়া হচ্ছে তার বিপরীতে যে টাকা সুদ দেয়া
হয় সেটা নিষিদ্ধ রিবা
- বিকাশ বা এই জাতীয় মোবাইল পেমেন্ট সিস্টেমেও জমাকৃত টাকার উপরে সুদ
নেয়ার অপশন থাকে। সেটা অফ রাখতে হবে।
- বিভিন্ন বণ্ড, সঞ্চয়পত্র এগুলোতে আসলে ইস্যুকারীকে ধার দেয়া হয় তাই এটার বিপরীতে
যে অতিরিক্ত টাকা দেয়া হয় সেটাও রিবা।
অন্যান্য মুদ্রা ভিত্তিক
লেনদেনের ক্ষেত্রে রিবাঃ
আগের একটি পর্বে ( ৮ম) আমরা একটি হাদীসটি
উল্লেখ করেছি যেখানে মুদ্রা ব্যবহারের একটি সাধারণ একটা মূলনীতি বলে দেয়া হয়েছে, সেটার আলোকে-
· আমরা যদি দুটো দেশের মুদ্রার মাঝে
লেনদেন করতে চাই, যেমন ডলার আর টাকা, তাহলে এক্সচেঞ্জ রেট বা পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে যে কোনো রেটে আমরা
লেনদেন করতে পারি, কিন্তু সেটা হতে হবে নগদ।
· যদি একই মুদ্রার মাঝে লেনদেন করতে চাই
তাহলে কমবেশী করা যাবে না। যেমন আমরা অনেক সময় ভাংতি টাকা খুঁজে থাকি। ভাংতি টাকা
দেয়া নিয়ে কোনো ব্যবসা করা যাবে না ।আবার ঈদের সময় দেখা যায় আমরা পুরান নোটের বদলে
নতুন নোট নিয়ে থাকি, তখন পরিমাণে কম বেশী করি, যেটা করা যাবে না।
আজকাল যদিও আমরা সোনা/ রূপা এগুলো মুদ্রা হিসেবে ব্যবহার
করি না, তবুও হাদীসটিতে যেহেতু সরাসরি নাম ধরে এগুলোর কথা এসেছে, তাই এগুলো যে অবস্থাতেই থাকুক না কেন, মুদ্রার
বিধান প্রযোজ্য হবে। যেমনঃ
- পুরান সোনার
গয়নার সাথে নতুন গয়না সরাসরি লেনদেন করা যাবে না। পুরোনোটা বিক্রি করে সেই
টাকা দিয়ে নতুনটা কিনতে হবে।
- সোনার গয়না আর সোনার বার বা কয়েনের মাঝে যদি লেনদেন করা হয় তাহলেও ওজন
করতে হবে এবং সমান ওজনের হতে হবে। সোনার গয়নায় কারুকার্য করা আছে বলে কোনো
অতিরিক্ত চার্জ রাখা যাবে না।
সার্ভিস নেয়ার ক্ষেত্রে রিবাঃ
- আমরা যদি কিস্তিতে কোনো পণ্য কিনে থাকি আর সেটার নির্ধারিত মূল্য (যা পরে বদলানোর সুযোগ থাকে না) যদি
ক্যাশ প্রাইসের চেয়ে বেশী হয় তাহলে সমস্যা নেই। এটাকে অনেকে সুদের সাথে গুলিয়ে
ফেলেন। কিন্তু আসলে এটা সুদ নয়, কারণ কিস্তিতে পাওয়ার কারণে
ক্রেতা পণ্যটা পূর্ণ মূল্য শোধ করার আগে থেকেই ব্যবহার করতে পারেন, এই সুবিধার বিনিময়ে কিছু অতিরিক্ত মূল্য চার্জ করাতে কোনো সমস্যা
নেই। তবে মূল্যটা অবশ্যই একটা চুক্তির মাধ্যমে চূড়ান্ত
করতে হবে এবং পরে আর বদলানো যাবে না। অর্থ্যাৎ কিস্তিতে বেশি দামে
নিয়ে পরে দুই দিন পর পুরো পরিশোধ করলেও দাম কিস্তিরটাই থাকবে।
- তবে কিস্তির
দেনা শোধে ব্যর্থ হলে সময়ের ভিত্তিতে তার ওপর যদি বেশী টাকা নেয়া হয় তবে সেই
অতিরিক্ত টাকাটা রিবা হিসেবে গণ্য হবে।
- একইভাবে যে কোনো পাওনা পরিশোধে
দেরী করলে যদি তার ওপর কোন চার্জ আরোপ করা হয়, তবে তা রিবা। তাই বিদ্যুৎ বিল,
পানির বিল ইত্যাদির উপরে জরিমানা রিবার মধ্যে গণ্য হবে।
এখানে আমরা শুধু বহুল
প্রচারিত কয়েকটি রূপের কথা বলেছি। অবশ্যই আরো নানারকম রূপে রিবা আমাদের জীবনে
আবির্ভূত হতে পারে। তাই কোনো কিছু নিয়ে সন্দেহ হলে আমাদের উচিৎ কোনো আলিমের সাথে
পরামর্শ করে নিশ্চিত হয়ে নেয়া। এব্যাপারে ইসলামী অর্থনীতি ফোরাম নামের গ্রুপটি
আমাদের সাহায্য করতে পারে। https://www.facebook.com/groups/iecforum/
Apu porer porbo kobe dite parben?
ReplyDelete