‘ধর্ম যার যার,
দেশ সবার’- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় এই স্লোগানটা লেখা দেখতাম নীলক্ষেত যাওয়ার পথে। পাশে লেখা থাকত ছাত্র ইউনিয়ন। মূলত বাম্পন্থীদের মন্ত্র এটা। রিক্সায় বসে বসে এটা নিয়ে ভাবতাম, আর চিন্তা করতাম এই আপাত নিরীহ, খুব আকর্ষণীয় পাঁচটা শব্দের মাঝে কি ভয়ংকর একটা জীবনাদর্শ লুকিয়ে আছে, তা কি টের পাচ্ছে মানুষ?
কী সমস্যা উপরের বাক্যটাতে? বাক্যটা নিয়ে যদি একটু চিন্তা করি, তাহলে বুঝব এখানে বলা হয়েছে আমাদের ঐক্যের ভিত্তি হওয়া উচিৎ দেশাত্ববোধ, ধর্ম নয়। কারণ কি? কারণ অনেকগুলো হতে পারে-
- একেক জনের ধর্ম একেক, কিন্তু দেশ common। ধর্ম কার কোনটা কি হবে তার উপর মানুষের কোন হাত নেই। আমি যদি হিন্দু পরিবারে জন্মাই, তবে আমি হিন্দু, মুসলিম পরিবার হলে মুসলিম। আমার গায়ের রং এর ভিত্তিতে যেমন আমাকে বৈষম্য করা যাবেনা, তেমনি ধর্মের ভিত্তিতেও করা যাবে না।
- ধর্ম একটা ব্যক্তিগত বিষয়। কারো বিশ্বাসের উপর আঘাত হানা যাবে না, অসম্মান করা যাবে না। সরকার, রাজনৈতিক ব্যবস্থায়, অর্থনীতিতে ধর্মকে আনা যাবে না।
- সকল ধর্মের মাঝেই সত্যতা আছে, ঈশ্বরের কাছে যাওয়ার শুধু বিবিধ পথ এগুলো। তাই সকল ধর্মকে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে শ্রদ্ধা করতে হবে.........
এখন একটু চিন্তাশীল মন নিয়ে আমরা যদি উপরের বিষয়গুলো ভাবি, তাহলে কী পাই? পাঠক, একটু ভেবে দেখেন তো প্রথম দুইটা জিনিস কি ইসলামের ক্ষেত্রে সত্য?
প্রথমত, ইসলাম কি কখনো পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া যায়?
তাহলে তো আল্লাহর দৃষ্টিতে নূহ আলাইহিস সালামের ছেলে মুসলিম আর ইব্রাহীম আলাইহিসসালাম মূর্তিপূজক হিসেবে গণ্য হতেন !আমার নামটা মুসলিম শুনালে কি আমি মুসলিম হয়ে যাই? ঈমানের ছয়টা স্তম্ভ জেনে, বুঝে, হৃদয়ে ধারণ করে, সেই অনুযায়ী আমল করলে তবেই মুসলিম হওয়ার দাবী করা যেতে পারে! আমাদের আসলে নও মুসলিমদের কাহিনী পড়া উচিৎ ইসলামকে আবিষ্কার করার জন্য!
আমার নিজের কথা বলতে গিয়ে আমি প্রায়ই বলি আমার ইসলামে আসার পরে, বা আগে...ইত্যাদি। মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও আমার ইসলামে প্রবেশ করতে হয়েছে ।আমি খুব গর্ব করে বলতে পারি,
By the will of Allah, I have chosen to
be a Muslim….., Alhamdulillah.
দ্বিতীয়ত আর সব ধর্ম যাই হোক না কেন,
ইসলাম কি ব্যক্তিগত বিষয়? কতগুলো rituals এর সমষ্টি শুধু?ইসলাম তো আসলে একটা পূর্ণাংগ জীবন ব্যবস্থা,
যাতে দিক নির্দেশনা দেয়া আছে মানব জীবনের সকল ক্ষেত্রে নিয়ে- হোক তা রাজনীতি, অর্থনীতি, পররাষ্ট্র নীতি, পারিবারিক, কিংবা প্রতিরক্ষা...আমি নিজে ইসলামী অর্থনীতির একজন full time ছাত্রী, এই কথাটা তাই আমার কাছে রীতিমত হাস্যকর! Cafeteria
Islam (pick and choose) বলে কোন স্বীকৃত পন্থা নেই। এ ব্যাপারে আল্লাহ বলেন-
তবে কি তোমরা কিতাবের কিছু অংশ বিশ্বাস কর এবং কিছু অংশ অবিশ্বাস কর?
যারা এরূপ করে দুনিয়ার জীবনে দুর্গতি ছাড়া তাদের আর কোনই পথ নেই, কিয়ামতের দিন তাদের কঠোরতম শাস্তি দেয়া হবে (২:৮৫)
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বোধ করি শেষের পয়েন্টটা-সকল ধর্মের মাঝেই সত্যতা আছে, ঈশ্বরের কাছে যাওয়ার শুধু বিবিধ পথ এগুলো। তাই সকল ধর্মকে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে শ্রদ্ধা করতে হবে...
আসলে কি তাই?
আমরা একেকজন সবাই ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আর্কিটেক্ট......অনেক উচ্চশিক্ষিত হলেও যখন Theology নিয়ে আলোচনা উঠে, আমরা কিভাবে যেন আমাদের ব্রেনকে খুব তুচ্ছ জ্ঞান করতে শুরু করি। ক্যালকুলাসের জটিল অংক আমাদের মাথায় ঢুকলেও ইসলামের খুব মৌলিক বিষয়, যেমন ধরেন বিদআতের সংজ্ঞা, আমাদের কাছে একদম গোলকধাঁধা লাগে!তাই দেখা যায় একটা জীবন কেটে যায় আমাদের ইসলাম নিয়ে, অন্যান্য ধর্মের সাথে এটার পার্থক্য নিয়ে পড়াশোনা করার সময় হয়ে ওঠে না।
আলহামদুলিল্লাহ প্রায় প্রতিটি ধর্মের ((Hinduism, Buddhism, Judaism, Christianity) বিশ্বাসগত ভিত্তি নিয়ে বিস্তারিত পড়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। বিস্ময়কর ব্যাপারে হচ্ছে যে প্রতিটা ধর্মের মাঝে এমন বিষয় আছে যা ইসলামী পরিভাষায় শিরকের আওতায় পড়ে।তাই আপনি ইসলাম পালন করবেন অথচ শিরককে ঘৃণা করবেন না, তা কি হয় কখনও? এ যে সবচেয়ে জঘন্য পাপ! যে কোন ধর্মই স্রষ্টার কাছে পৌঁছানোর valid way, এই মতবাদের যারা ধারক, বাহক ও প্রচারক তাদের কাছে আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে যে নিয়তির অমোঘ লিখনে হাজির হওয়া এমন হঠাৎ মৃত্যু নিয়ে তাদের ভাবনাটা কি? মৃত্যু পরবর্তী জীবন নিয়ে তারা কি ভাবেন? কি হয় আমাদের আত্মাটার মৃত্যুর পর?
‘আমি জায়গা কিনব কিনব করে পেয়ে গেলাম জায়গা শুদ্দ মাটি” সামিনা চৌধুরির এই গানটা বা কুমার বিশ্বজিৎ এর ‘ একদিন কান্নার রোল উঠবে আমার বাড়িতে’------------এগুলো শুনতে শুনতে মৃত্যু সম্পর্কে যে রোমান্টিক একটা ধারণা আমাদের গড়ে উঠেছে, ব্যাপারটা কি এতই রোমান্টিক আসলে? শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানীর আহকামুল জানায়িজ বইতে লাশ তাড়াতাড়ি দাফন করা উচিৎ এটার দলিল হিসেবে একটা হাদীস পড়েছিলাম, যার মর্মার্থটা এরকম ছিল যে মৃত ব্যক্তিটা যদি ভাল হয় তবে তাকে তার পুরস্কারের কাছে তাড়াতাড়ি পৌঁছে দাও, আর যদি সে খারাপ হয়, তবে তাকে তাড়াতাড়ি কাঁধ থেকে ফেলে দিয়ে বোঝামুক্ত হও! শেষের এই অংশটা পড়ে আমার বুকটা কেঁপে উঠেছিল। জাহান্নাম বা মৃত্যুপরবর্তী আযাবের বর্ণনাগুলো এমন যে এগুলো নিয়ে চিন্তা করলে রাতের ঘুম হারাম হয়ে যাওয়া উচিৎ।নিজের জীবনটাকে কিভাবে কাটাচ্ছি, কত সময় আলসেমি করে অপচয় করছি, ভাবতেই গা কাঁটা দিয়ে উঠা উচিৎ।
আমার ইসলামে আসার সূচনাটাই এই মৃত্যুপরবর্তী জীবন নিয়ে ভাবনা চিন্তা থেকে। তখন আমি comparative religion নিয়ে নিজ উদ্যোগে বেশ পড়াশোনা করেছি। আমার তখন মনের অবস্থা এমন ছিল যে আমি যদি বুঝতাম Hinduism is the truth, আমি তাইলে হিন্দু হয়ে যেতাম!আর এই মৃত্যুপরবর্তী জীবনটা নিয়ে একেকটা ধর্মের concept একেক রকম। এগুলো এতটাই আলাদা যে (যাকে বলে ১০০% Mutually Exclusive) একটা যদি সত্যি হয়, তবে আরেকটা কখনো হতে পারে না। Then How come every religion is true????এটা বোঝার জন্য কোন ডিগ্রী লাগে না, common sense ই যথেষ্ট!
আমরা একেকজন সবাই ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আর্কিটেক্ট......অনেক উচ্চশিক্ষিত হলেও যখন Theology নিয়ে আলোচনা উঠে, আমরা কিভাবে যেন আমাদের ব্রেনকে খুব তুচ্ছ জ্ঞান করতে শুরু করি। ক্যালকুলাসের জটিল অংক আমাদের মাথায় ঢুকলেও ইসলামের খুব মৌলিক বিষয়, যেমন ধরেন বিদআতের সংজ্ঞা, আমাদের কাছে একদম গোলকধাঁধা লাগে!তাই দেখা যায় একটা জীবন কেটে যায় আমাদের ইসলাম নিয়ে, অন্যান্য ধর্মের সাথে এটার পার্থক্য নিয়ে পড়াশোনা করার সময় হয়ে ওঠে না।
আলহামদুলিল্লাহ প্রায় প্রতিটি ধর্মের ((Hinduism, Buddhism, Judaism, Christianity) বিশ্বাসগত ভিত্তি নিয়ে বিস্তারিত পড়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। বিস্ময়কর ব্যাপারে হচ্ছে যে প্রতিটা ধর্মের মাঝে এমন বিষয় আছে যা ইসলামী পরিভাষায় শিরকের আওতায় পড়ে।তাই আপনি ইসলাম পালন করবেন অথচ শিরককে ঘৃণা করবেন না, তা কি হয় কখনও? এ যে সবচেয়ে জঘন্য পাপ! যে কোন ধর্মই স্রষ্টার কাছে পৌঁছানোর valid way, এই মতবাদের যারা ধারক, বাহক ও প্রচারক তাদের কাছে আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে যে নিয়তির অমোঘ লিখনে হাজির হওয়া এমন হঠাৎ মৃত্যু নিয়ে তাদের ভাবনাটা কি? মৃত্যু পরবর্তী জীবন নিয়ে তারা কি ভাবেন? কি হয় আমাদের আত্মাটার মৃত্যুর পর?
‘আমি জায়গা কিনব কিনব করে পেয়ে গেলাম জায়গা শুদ্দ মাটি” সামিনা চৌধুরির এই গানটা বা কুমার বিশ্বজিৎ এর ‘ একদিন কান্নার রোল উঠবে আমার বাড়িতে’------------এগুলো শুনতে শুনতে মৃত্যু সম্পর্কে যে রোমান্টিক একটা ধারণা আমাদের গড়ে উঠেছে, ব্যাপারটা কি এতই রোমান্টিক আসলে? শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানীর আহকামুল জানায়িজ বইতে লাশ তাড়াতাড়ি দাফন করা উচিৎ এটার দলিল হিসেবে একটা হাদীস পড়েছিলাম, যার মর্মার্থটা এরকম ছিল যে মৃত ব্যক্তিটা যদি ভাল হয় তবে তাকে তার পুরস্কারের কাছে তাড়াতাড়ি পৌঁছে দাও, আর যদি সে খারাপ হয়, তবে তাকে তাড়াতাড়ি কাঁধ থেকে ফেলে দিয়ে বোঝামুক্ত হও! শেষের এই অংশটা পড়ে আমার বুকটা কেঁপে উঠেছিল। জাহান্নাম বা মৃত্যুপরবর্তী আযাবের বর্ণনাগুলো এমন যে এগুলো নিয়ে চিন্তা করলে রাতের ঘুম হারাম হয়ে যাওয়া উচিৎ।নিজের জীবনটাকে কিভাবে কাটাচ্ছি, কত সময় আলসেমি করে অপচয় করছি, ভাবতেই গা কাঁটা দিয়ে উঠা উচিৎ।
আমার ইসলামে আসার সূচনাটাই এই মৃত্যুপরবর্তী জীবন নিয়ে ভাবনা চিন্তা থেকে। তখন আমি comparative religion নিয়ে নিজ উদ্যোগে বেশ পড়াশোনা করেছি। আমার তখন মনের অবস্থা এমন ছিল যে আমি যদি বুঝতাম Hinduism is the truth, আমি তাইলে হিন্দু হয়ে যেতাম!আর এই মৃত্যুপরবর্তী জীবনটা নিয়ে একেকটা ধর্মের concept একেক রকম। এগুলো এতটাই আলাদা যে (যাকে বলে ১০০% Mutually Exclusive) একটা যদি সত্যি হয়, তবে আরেকটা কখনো হতে পারে না। Then How come every religion is true????এটা বোঝার জন্য কোন ডিগ্রী লাগে না, common sense ই যথেষ্ট!
No comments:
Post a Comment