আনিকার
বাসায় স্নিগ্ধাকে দেখে একদম চমকে গিয়েছিল স্বর্ণা। না চমকে উপায় নেই অবশ্য,
পুরোদস্তুর বোরকায় ঢাকা ওকে দেখে বোঝার উপায় নেই এই সেই বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের
স্নিগ্ধা...জিন্স আর টিশার্ট ছিল যার প্রতিদিনের পোশাক। কত চেষ্টা করেছে ইসলামের
সৌন্দর্য্য বোঝাতে, একটুও পারে নি। তারপর একসময় হাল ছেড়ে দিয়েছিল। সেই
স্নিগ্ধা! স্নিগ্ধাও স্বর্ণাকে দেখে জড়িয়ে
ধরল দু হাত ধরে......পাক্কা ৫ বছর পর দেখা......
বাসায়
ফিরেও একটু আনমনা ছিল স্বর্ণা।কিছুই ভালো লাগছে না......আম্মা ভাপা পিঠা
বানিয়েছিলেন, এতদিন দেশের বাইরে থাকার পর আম্মার হাতের পিঠা! তবু কেন কিছু ভালো
লাগছে না?
স্নিগ্ধার
কথাগুলো মাথায় ঘুরছিল। আনিকার ভূয়সী প্রশংসা করছিল। কিভাবে ওর মাধ্যমে ইসলাম
প্র্যাক্টিসের প্রতি আগ্রহ জন্মেছে, কিভাবে আনিকা ওকে ধরে ধরে কুরআন শুদ্ধভাবে
তিলাওয়াত করা শিখিয়েছে......
বারান্দায়
বসে থাকতে থাকতে হঠাৎ একটা চিন্তা উঁকি দিল স্বর্ণার মাথায়। তবে কি স্নিগ্ধার মুখে
আনিকার এত প্রশংসা শুনে মনে খারাপ লাগছিলো ওর? অথচ আনিকাও তো ওর ইসলাম ক্লাসের
ঘনিষ্ঠ বান্ধবী! তবে কি স্নিগ্ধা আনিকার প্রভাবে বদলে যাওয়াতে মন থেকে খুশী হতে
পারে নি ও?
কিন্তু
তা তো না......ও তো একসময় নিয়মিত দুআ করতো স্নিগ্ধার জন্য......
তবে কি
স্বর্ণা চাইতো ওর মাধ্যমে একজন ইসলামে আসুক, ও কি আত্মতৃপ্তিতে ভুগতে চাইতো? নাকি
চাইতো ওর কাছের বন্ধু ইসলামের ছায়াতলে আসুক সেটা যেভাবেই হোক?
মাগরিবের
নামাযের আযান শুনে উঠে পড়লো বারান্দা থেকে। এখুনি আল্লাহর কাছে মাফ চাইতে হবে, আর
দুআ করতে হবে নিজের নিয়্যতের শুদ্ধতার জন্য। নিজেকেই নিজে মনে করিয়ে দিলো
স্বর্ণা.........আমি চাই আমার চারপাশের মানুষেরা ইসলামকে বুঝুক, পালন করুক কারণ
আমি তাদের ভালোবাসি......সেটা যার মাধ্যমেই হোক, আমি খুশী। আমার মাধ্যমে কেউ
ইসলামে এসেছে এই আত্মতৃপ্তিতে ভুগতে চাই যদি তবে সেটা রিয়া হয়ে যাবে যে !
No comments:
Post a Comment