Saturday, August 17, 2019

রিবা নিয়ে জানা সিরিজের স্ক্রিপ্ট -৯

        অর্থনীতিতে রিবার প্রভাব

আগের পর্ব পড়ে আমাদের মনে হতে পারে যে মুদ্রা থেকে কোনো ধরণের সুবিধা নিতে আল্লাহ আমাদের কেন নিষেধ করলেন? সুদ জিনিসটাতে ঝামেলা কোথায়?
একটু চিন্তা করলে দেখবো যে আমাদের বেঁচে থাকার জন্য যা কিছু প্রয়োজন-খাবার, পোশাক, চিকিৎসা-সব কিছু যোগাড় করতেই মুদ্রা লাগে। আপনার কাছে যদি মুদ্রা না থাকে তাহলে আপনার যত দক্ষতা বা যোগ্যতাই থাকুক না কেন আমাদের পক্ষে টিকে থাকা সম্ভব হবে না কারণ আমরা লেনদেন করতে পারবো না
এখন একটা সমাজ যদি সুদভিত্তিক হয়, তাহলে সেই সমাজে যাদের হাতে মুদ্রা আছে তাদের কাছে বাকিরা জিম্মি হয়ে পড়বে। ব্যাপারটা বুঝতে আসুন একটা দৃশ্য কল্পনা করি। আপনি একজন দর্জি এবং খুব ভালো ড্রেস বানাতে পারেন। কিন্তু আপনার সেই দক্ষতা কাজে লাগানোর জন্য আপনার দরকার পুঁজি যা দিয়ে আপনি সেলাই মেশিন কিনবেন। যে আপনাকে সেলাই মেশিন কেনার টাকা ধার দিলো, সে আপনাকে শর্ত জুড়ে দিলো যে আপনি যা ড্রেস বানাবেন সব ঋণদাতার কাছে তার নির্ধারণ করা দামেই বেঁচতে হবে। এখন আপনার কাছে যেহেতু আর কোনো উপায় নেই, তাই আপনি এই শর্তে রাজি হলেন। তাহলে আপনি দেখবেন যে যতই সময় যাক না কেন আপনার অর্থনৈতিক অবস্থা একই রকম রয়ে গেছে। 
এখন ব্যাপারটা যদি এমন হয় যে অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া কেউই মুদ্রা ধার দিচ্ছে না বা উপরের কেসটির মত কোনো শর্ত জুড়ে দিচ্ছে তখন সেই সমাজের বেশিরভাগ মানুষের অবস্থা হবে দুর্বিষহ, কারণ তারা ঠিকমত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতে পারবে না। আর  অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডই হচ্ছে একটা সমাজের চালিকা শক্তি। এ যেন আমাদের শরীরের মত, যখন রক্ত চলাচল করতে পারে না, তখন প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও অন্যান্য উপাদান শরীরের জরুরী অংশগুলোতে পৌঁছাতে পারে না এবং আমরা নানা রকম রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হই রিবা বা সুদ তাহলে শরীরের রক্ত তথা বিনিময়ের মাধ্যমকে জমাট বাধিয়ে দেয়, এটার অবাধ চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি করে  
একটা সমাজে যদি রিবার প্রসার ঘটে তখন মানুষ নিজের অজান্তেই এক শ্রেণীর মানুষের দাস হয়ে যায়। সেই শ্রেণী মানুষের অসহায়তার সুযোগ নিতে কার্পণ্য করে না। এমন জুলুম ও শোষণের দ্বার বন্ধ করতেই ইসলাম কাউকে টাকা ধার দিলে বিনিময়ে অতিরিক্ত চার্জ আদায় করা একদমই নিষিদ্ধ করে দিয়েছে, ধার দিলে দিতে হবে কর্জে হাসানা, অর্থ্যাৎ যতটুকু ধার দেয়া হয়েছে শুধু সেটুকুই ফেরৎ নেয়া যাবে। শুধু তাই না, ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে অতিরিক্ত কোনো সুবিধাও নেয়া যাবেনা যেমনটা আমরা উপরে দেখেছি। সহজ শর্তে ঋণ বলে কোনো কিছুর অস্তিত্ব ইসলামে নেই। ঋণ দিলে কোনো শর্তই আরোপ করা যাবে না। 








No comments:

Post a Comment

রিবা নিয়ে জানা সিরিজের স্ক্রিপ্ট -১১

রিবার নানা রূপ আজকের পর্বে আমরা রিবার নানা রূপের সাথে পরিচিত হব যেন দৈনন্দিন জীবনে আমরা সেগুলো থেকে বেঁচে থাকতে পারি-   টাকা ধার নেয়ার...